কিছু উপদেশ

 বিল গেটসকে চিনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন । কিন্তু আমরা তাকে চিনলেও ভালোকরে জানি না , তার সফলতার পিছনের গল্প এবং তরুণদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও পরামর্শ গুলোর সম্পর্কে ।

একজন সফল মানুষ সম্পর্কে শুধু জানলেই হবে না , তাকে নিয়ে একটু রির্সাচ করা ও অত্যন্ত প্রয়োজন ।
কিভাবে সফল হয়েছে , কোথায় থেকে কোথায় এসেছে , কাজের ধরন ও স্ট্রেটেজি কেমন ছিল এবং কি পরিমাণ পরিশ্রম করেছে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত অবশ্যই জানা উচিত ?
তাহলেই কিন্তু আমরা সঠিক ও পর্যাপ্ত অনুপ্রেরণা পাবো এবং নিজের ভুল গুলো শুধরিয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টা ইচ্ছা জাগবে ।
তাই সবসময় চেষ্টা করবেন , যে সফল মানুষটিকে আপনি চিনেন বা যেসব সফল মানুষদের নিয়ে আপনি কথা বলছেন , আগে তাদের পিছনের ব্যর্থতা ও কাজের কৌশল এবং তাদের পরামর্শ গুলো ভালো করে জানা ।




আমার এই লেখায়  আপনি জানতে পারবেন , তরুণের জন্য বিল গেটসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও পরামর্শ , যা আপনার ক্যারিয়ারকে আরও সুন্দর ও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে যথেষ্ট সাহায্য কর হবে ।
তাহলে দেরি না করে শেষ পর্যন্ত পড়ুন ও বুঝার চেষ্টা করুন ।

০১। যত দ্রুত সম্ভব শুরু করুনঃ


বিল গেটসের উক্তি বা পরামর্শ গুলোর মধ্যে অন্যতম ও প্রধান উক্তিটি হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব শুরু করুন । বুড়ো বয়সে এসে যৌবনে কী - ই না করতে পারতাম এই আফসোস যেন আপনাকে না ভোগায় । এইসব চিন্তায় তখন আপনি অসুস্থায় পড়ে যাবেন যা হবে খুবই কষ্টদায়ক ।
এইজন্য শুরু করে দিন যে ‘ আইডিয়া আপনি মাথায় নিয়ে বসে আছেন , সেটা কাজে লাগিয়ে হয়তো কয়েক বছর পর অন্য কেউ সফল হবে ।

ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্নপূরণের শুরুটা হলে আপনার সফলতার সম্ভাবনা যতটুকুই থাকুক , অন্তত হাল ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে । এই জন‍্য ছাত্রজীবন থেকেই কিছু করতে শুরু করুন..।




০২। নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করো না ।

বিল গেটস সর্বদা বলেছেন , নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা থেকে বিরত থাকতে হবে । নিজের কাজকে ভালবাসতে হবে , সম্মান করতে হবে।
নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা মানে নিজেকেই অপমান করা । তাই সবসময় নিজের কাজ , আইডিয়া ও প্লানিংকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে ।


০৩। প্রতিদিন নিজের সেরাটা দিতে হবেঃ


হ্যাঁ , যদি সফলতার মুখ দেখতে চান তাহলে প্রতদিন আপনাকে নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করতে হবে ।
জীবনটা সেমিস্টার হিসেবে ভাগ করা নেই , যে দশ সপ্তাহ পর পর আপনি ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পাবেন ।
এমনকি এখানে “ ব্রেক ” বলেও কিছু নেই । অতএব , প্রতিদিন আপনাকে আপনার সেরাটাই দিতে হবে । প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময় নিজের কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে হবে ।





০৪। অসন্তুষ্ট কাস্টমার থেকে শিক্ষা নিনঃ


বিল গেটস বলেছেন , আপনার সবচেয়ে অসন্তুষ্ট কাস্টমার থেকেই শিক্ষা নেওয়ার সবচেয়ে বড় উৎস । অসন্তুষ্ট ক্রেতাদের থেকেই আপনি সঠিক শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবেন ও লাভবান হতে পারবেন । তাদের সকল অভিযোগই হচ্ছে শিক্ষার মূল উৎস ।
কাস্টমার থেকে অভিযোগ গ্রহন করুন , এর ফলে পরবর্তীতে আপনি তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাক্ট দিতে পারবেন যা ক্রেতারা আপনার প্রতি অনেক বিশ্বাসী ও সন্তুষ্ট হবে । এবং আপনার বিজনেস বা সার্ভিসকে বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে ।


০৫। নিজেই নিজের বস হনঃ

আপনার সকল কাজের বস আপনি নিজেই হন । আপনার স্বপ্নের পিছনে দৌড়ানোর জন্য নিজেকে খুব শক্ত ভাবে প্রস্তুত করতে হবে ।
আপনি নিজেই যদি নিজের স্বপ্নপূরণের কাজে না নামেন , অন্য কেউ তাঁর স্বপ্ন পূরণে আপনাকে নিয়োগ করবে ।
আপনি হবেন কোম্পানির একজন সামান্য কর্মী আর যে সুযোগ পেয়ে আপনার স্বপ্ন পূরণ করবে , সে হবে আপনার বস ।
তার চেয়ে বরং এই শ্রম নিজের স্বপ্নপূরণের পেছনে খরচ করুন এবং নিজেই বস হওয়ার চেষ্টা করুন ।

০৬। সময় গুলো নিজের জন্য নিয়ন্ত্রণ করুনঃ

আমরা সবাই জানি , সময় চলে গেলে আর ফিরে আসে না । সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না । বিল গেটস বলেছেন আপনি যতই প্রতিভাবান হোন না কেন , দিনে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় আপনি পাচ্ছেন না । এই ২৪ ঘণ্টা কে কীভাবে ব্যবহার করে , সেটাই সফল এবং অসফল মানুষের মধ্যে পার্থক্য,,
প্রয়োজন হলে কালকের দিনটি কি ভাবে কাটাবেন,, তা রাতেই কোনো ডাইরিতে লিখে রাখুন।





০৭। প্রত্যয়ী হন প্রতিজ্ঞা করুনঃ

সব সফল উদ্যোক্তাই জোর দিয়ে এই পরামর্শ দিয়েছেন । যে কাজটি করছেন , তার প্রতি ভালোবাসা থাকতেই হবে । সফল মানুষেরা একমাত্র ভালোবাসা দিয়েই কঠিন কাজটাকে সহজে করেন ।


০৮। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় জীবনী সেরা স্কুলঃ

যত বই - ই পড়েন না কেন , শিক্ষাজীবনে যত পরীক্ষাই দেন না কেন — এসব কখনোই পুরোপুরি আপনাকে সত্যিকার জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শেখাবে না । নিজের জীবন থেকে শিখেই তৈরি হতে হবে ।




০৯। কখনও আশা হারাবেন নাঃ

লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে হতাশাবাদী হলে চলবে না । বরং সব সময় আশাবাদী হতে হবে ।
২০১৩ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিল গেটস বলেছিলেন ,
‘ আশাবাদ অনেক সময় মিথ্যে আশায় পরিণত হয় । কিন্তু মনে রাখতে হবে , “ মিথ্যে হতাশা ” বলেও কিছু আছে ।

১০। সমালোচনাকে স্বাগত জানানঃ

বিল গেটস তাঁর বিজনেস অ্যাট দ্য স্পিড অব থট বইয়ে সমালোচনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন ।
তিনি বিশ্বাস করেন , অভিযোগ আর অসন্তুষ্টি আপনাকে আরও ভালো করার সুযোগ করে দেয় । তিনি লিখেছেন ,
' আপনার সবচেয়ে অসন্তুষ্ট কাস্টমাররাই আপনার শেখার সবচেয়ে বড় উৎস । তাই যেকোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানান ।


১১। সাফল্যের হিসাব করুনঃ

২০০৩ সালে বিল গেটস দ্য মোস্ট পাওয়ারফুল আইডিয়া ইন দ্য ওয়ার্ল্ড নামে একটা বই থেকে তাঁর শিক্ষা কী , তা বলেছেন ।
' আপনি যদি একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে সব সময় হিসাব করেন , আপনি কতটুকু এগোলেন , তাহলেই লক্ষ্যে অবিচল থাকতে পারবেন ।
' সঙ্গে তিনি এ - ও যোগ করেছেন ,
' এটা বলা যত সহজ , করা ততটাই কঠিন । তারপরেও আপনাকে সফলতার  জন‍্য রুলস মেনে এগিয়ে যেতে হবে।


১২। জীবনটা সহজ নয় , যেনে নিনঃ

জীবনটা সহজ নয় , এটা মেনে নিন । আপনি যতই কঠোর পরিশ্রম করেন না কেন , এমন একটা সময় নিশ্চয়ই আসবে , যখন সবকিছু আপনার মনমতো হবে না । সবকিছু আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না । আপনি পড়ে যাবেন , কিন্তু আপনাকে আবার দাঁড়াতে হবে ।
নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

মন্তব্যসমূহ